Bangla Vuter Golpo| বিল্টুর বাড়ি একরাত| নতুন বাংলা ভুতের গল্প
ভুত নাম শুনলেই আমরা যেন কেমন একটা ভয় ভয় পাই। তেমনই ভুতের গল্প Vuter Golpo পড়তে মজাও পাই। তাই আপনাদের জন্যে একটি ভুতের ছোটগল্প দেওয়া হলো। গল্পের নাম- বিল্টুর বাড়ি একরাত
|| বিল্টুর বাড়ি একরাত ||
উফ! কি অবস্থা। ফোনটা নট রিচেবল বলছে কেন বিল্টুর। সকাল থেকেই এই নট রিচেবেল শুনে শুনে কানটা পচে গেলো। বিল্টু কি আজ তাহলে ফিরবেনা? কিন্তু ও যে বলেছিলো শনিবার সেমেস্টার শেষ হলেই ফিরে আসবে। বিল্টুর মা বাবা বৈচিগ্রামের বাড়ি যাওয়ায় অর্ক কে বলেছিলো ওদের বাড়ি কয়েকদিন থাকতে। বিল্টুকে তো ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না। বাড়ি গিয়ে দেখবো? ফিরেছে কিনা? হয়তো বাড়ি ফিরেই ল্যাদ খেতে খেতে ঘুমিয়ে পড়েছে। বিল্টুর মতো এত ল্যাদখোর আগে দেখেনি অর্ক। আর হবেই না কেন ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্ট বলে কথা। এই সব ভাবতে ভাবতে হাতে একটা জলের বোতল নিয়ে বেরিয়ে পড়লো অর্ক। আকাশে কালো মেঘ দেখা দিয়েছে। চাঁদ টাকেও দেখা যাচ্ছে না প্রায়। হালকা ঝোড়ো হাওয়া চলছে। রাতের খাওয়া শেষ করে একটা সিগারেট ধরানো বরাবরের অভ্যেস অর্কের। মোবাইলে দেখলো ১১.০৭। পাড়ার মোড়ের দোকানটা ঠিক ১১টায় ই বন্ধ করে দেয়। অগত্যা সিগারেট না পেয়ে পকেটে রাখা আধপোড়া সিগারেট টা ধরিয়ে সুখটান দিতে দিতে এগোতে লাগলো। অর্কের বাড়ি থেকে বিল্টুর বাড়ি মিনিট দশেকের হাঁটা পথ। হাওয়ার বেগটা বাড়তে থাকায় দুটো বাড়তি দেশলাই কাঠি নষ্ট হয়েছিলো অর্কের।
Bangla Vuter Golpo
বিল্টুর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে কিছুটা হতাশ হয়ে উঠেছিলো অর্ক। গেটে তালা দেওয়া। বিল্টু ফেরেনি এখনো। কিন্তু ও ফিরবেনা সেটা জানাতে পারতো। ফোনটা বার করে কি ফোন করে দেখবে আর একবার। যদি আবারো নট রিচেবেল বলে। তাহলে কি করবে? এই ভাবতেই হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকে উঠলো। ঝোড়ো হাওয়ার সাথে নেমে গেলো মুষলধারায় বৃষ্টি। সাথে সাথেই লোডশেডিং। অর্ক দৌড়ে বিল্টুদের পাশের বাড়ির শেডের তলায় বৃষ্টি থেকে বাঁচতে আশ্রয় নিলো।
মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই ছুটতে ছুটতে প্রায় ভিজে অবস্থায় কে যেন ঢুকলো। তালা খুলতে লাগলো বিল্টুদের বাড়ির গেটের। আরে হ্যাঁ। এতো বিল্টু। কলেজের ইউনিফর্ম টাও গায়ে পুরোপুরি ভিজে গেছে। অর্ক ডাক দিলো “বিল্টু ”
– এই বিল্টু।
বৃষ্টি আর মেঘের আওয়াজে অর্কের গলা বিল্টু অবধি পৌছোলনা বোধহয়। বিল্টু ততক্ষনে ঘরে ঢুকে পড়েছে। অর্ক শেড থেকে সরে একদৌড়ে বিল্টুদের দরজার সামনে এসে আবারো ডাক দিলো “বিল্টু”।
– এ বিল্টু।
বাংলা ভুতের গল্প
কিন্তু কোনো উত্তর পেলোনা অর্ক। ঘরের ভিতর কিছু একটার জোরালো শব্দ হলো। তারপর ভেসে আসলো চাপা কান্নার শব্দ। বীভৎস শব্দের সাথে জোরালো কান্না। বৃষ্টিতে সারাশরীর ভিজে যাচ্ছে অর্কের। সাড়া পাচ্ছে না দেখে দরজার পাল্লা টা ঠেলে ঘরে ঢুকে পড়লো অর্ক। চারিদিক ঘুঁটঘুটে অন্ধকার। মোবাইলের ফ্ল্যাশটা জ্বালতেই অবাক হয়ে গেলো অর্ক। কিছুটা ভয়ও পেলো। ঘরে বিল্টু নেই। ঘরের মেঝে শুকনো খটখটে অথচ বিল্টু ভিজে ভিজেই ফিরলো। একটুও জলের ছাপ ও নেই। কিছুটা ভয়ে বিল্টুদের রান্নাঘর ও বাথরুম দেখে নিশ্চিত হলো ঘরে কেউ নেই। বিল্টুর কোনো অস্তিত্বই যেন নেই এই ঘরে । কিন্তু ও তো নিজের চোখে দেখলো। বিল্টু ঘরে তালা খুলে ঢুকলো। কোথায় গেলো বিল্টু? বিল্টু না আসলে তালা খুললো কে? বিল্টুদের আয়নার দিকে চোখ পড়তেই শিউরে উঠলো অর্ক। তার পেছনে দাঁড়িয়ে বিল্টুর ছায়ামূর্তি। কি ভয়ঙ্কর। জিভ বেরিয়ে রয়েছে। চোখ যেন আগুনের মত ঝলসে আছে। ভয়ে ও আতঙ্কে বাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করতে, পারলো না। কেউ যেন তাকে টেনে ধরে রেখেছে। হাত পায়ের জোরও কমে গেছে। কেউ যেন তাকে জাপটে আটকে রাখতে চাইছে। গলার কাছে একটা অদৃশ্য হাত অনুভব করতে লাগলো সে। চিৎকারে ডাকার ক্ষমতাও যেন তার নেই। মুখ থেকে কেবল বেরোচ্ছে গোঁঙানির শব্দ। হঠাৎ এক ধাক্কায় ধপ করে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে জ্ঞান হারালো অর্ক।
Bengali Ghost Story
অর্ক যখন চোখ খুললো। সামনে অচেনা অজানা লোকজনের ভীড়। বিল্টুর পাড়াপড়শিদের ই বোধহয়। প্রত্যের মুখে যেন একটা করে প্রশ্নচিহ্ন ঝুলে আছে অর্কের জন্য। ভীড়ের মধ্যে থেকে এক মাসিমা দুধের গ্লাস এগিয়ে দিয়ে বললো “এইটা খেয়ে নাও,ভালো লাগবে”। তখন যেন কোনোকিছুই ভালো লাগছিলোনা তার। চোখ জবা ফুলের মত লাল। চোখে মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট। এদিক ওদিক তাকিয়ে অর্ক যেন কাউকে খুঁজছিলো। অনুসন্ধিৎসু চোখ নিয়ে অর্ক বললো বিল্টু বিল্টু কোথায়?
-বিল্টু?
হ্যাঁ। বিল্টু। ভীড়ে ঠেলে এক মধ্যবয়স্কা কাকু এসে বললো – “তোমার কিছু একটা ভুল হচ্ছে বাবা। বিল্টুতো প্রথম পরীক্ষা খারাপ দেওয়ার পর পরীক্ষার চাপ সামলাতে না পেরে সুইসাইড করে। মেসেই গলায় দড়ি দেয়। ও তো আমাদের মাঝে আর নেই… “
Bangla Vuter Golpoটি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করতে একদম ভুলবেন না। ধন্যবাদ |
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল – Bengalicaptions
আরো কিছু দুই লাইনের কবিতা – রোম্যান্টিক ক্যাপশন